ইতালিতে বঙ্গবন্ধুর ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত

বিশ্ব বাংলা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:০৮:৫৯,অপরাহ্ন ১৮ মার্চ ২০২২ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় (১৭ মার্চ ২০২২) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস, রোম, ইতালি।বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত বিশেষ এই দিনের অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন,জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ,জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন,বাণী পাঠ, দোয়া, মোনাজাত,ঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে নির্বাচিত অংশ পাঠসহ বিশিষ্ট আলোচকদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা এবং প্রবাসী শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সকাল ৯টা ৩১ মিনিটে রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান জাতীয় সঙ্গীতের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে দিনের কর্মসূচি সূচনা করেন। সকাল ১০টায় দূতাবাসের সভাকক্ষে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানের শুরুতেই দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী,পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিষয়ে এক বিশেষ আলোচনা সভায়, বিভিন্ন সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ও প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকগণ অংশগ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহিদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধু শুধুমাত্র বাঙালি জাতিকেই স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দেননি, সারা বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তি সংগ্রামেও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও মানুষকে প্রেরণা যোগাবেন। রাষ্ট্রদূত বলেন,বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাঙালিকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি প্রদান করা। গণমানুষের এ অধিকার আদায়ের জন্য তিনি সারাজীবন আন্দোলন করেছেন এবং বিভিন্ন মেয়াদে কারাগারে তার প্রায় ১৩ বছর কেটেছে। বঙ্গবন্ধুর সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব সমগ্র জাতিকে একসূত্রে গেঁথেছিল যার ফলে বাঙালি পেয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন,জাতির পিতার অনুকরণীয় আদর্শ বাঙালিদের নিরন্তর অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। শৈশব হতেই শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দৃশ্যমান অকৃত্রিম ভালোবাসা পরিণত বয়সে তা মহান নেতার রাজনৈতিক দর্শন “মানুষের প্রতি ভালোবাসা” এর মধ্য দিয়ে কীভাবে প্রতিফলিত হয় তার উপর রাষ্ট্রদূত আলোকপাত করেন। রাষ্ট্রদূত,এ প্রসঙ্গে শিশুদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে শিশুদের শিক্ষাদানের প্রয়োজনীয়তার উপরও গুরুত্বারোপ করেন।পরে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে নির্বাচিত অংশ পাঠ করা হয় এবং এতে দূতাবাস কর্মকর্তা ছাড়াও নবীন প্রজন্মের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাংস্কৃতিক সংগঠন।
সঞ্চারি সংগীতায়ন এর শিশু-কিশোরদের ধারণকৃত বর্ণিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠানে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এ পর্যায়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের শুভেচ্ছা বার্তাসমূহের ভিডিও সংকলন প্রদর্শন করা হয়। জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষ্যে অডিটোরিয়ামটি উৎসবের সাজে সজ্জিত করা হয়। ব্যানার, ফেস্টুন, বেলুন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রভৃতি দিয়ে দৃষ্টিনন্দন ভাবে সাজানো হলটি প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালনের জন্য একটি আনন্দঘন আবহের সৃষ্টি করে। দিবসটি উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় প্রবাসী বাংলাদেশী শিশু-কিশোররা বিপুল সংখ্যায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণকারী ও বিজয়ী শিশু-কিশোরদের নাম ঘোষণা করে এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক কেটে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
