বালাগঞ্জে কুশিয়ারার ভাঙনের কবলে মসজিদ, বাজার ও সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:১৪:২৮,অপরাহ্ন ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯সিলেটের বালাগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর ভাঙনের ঝুকিতে পড়েছে মসজিদ, বাজার, ও সড়কসহ বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি।ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে প্রতিবছরের মতো নদীগর্ভে অনেক কিছুই তলিয়ে যাবে । এলাকাবাসীকে নদী ভাঙন থেকে রক্ষায় জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকার সর্বস্ত্ররের মানুষ।
জানা যায়, বালাগঞ্জ বাজারের কেন্দ্রীয় পুরাতন জামে মসজিদটি কুশিয়ারার ভাঙনের মুখে বিলিন হওয়ারপর স্থানান্তরিত মসজিদটিও এখন ভাঙনের মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে মসজিদের সীমানা প্রাচীর, টয়লেট ও প্রসাবখানাসহ গাছপালা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানে ফাটল দেখা দিয়েছে মসজিদের অজু ও প্রসাবখানা, ইমাম মুয়াজ্জিন থাকার ভবনে। বর্ষার পানি নেমে গেলে মসজিদ, সড়কসহ অনেক ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলিন হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
১৮৮২ সালের কুশিয়ারা তীরে উপজেলা সদরের একমাত্র মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। নদীপথে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বণিকরা এই মসজিদে নামাজ আদায় করতেন। মসজিদ প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরের মধ্যেই ভাঙনের কবলে পড়ে বিলিন হয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় এলাকাবাসী অর্থায়নে নদীর অনেক দুরে ১৯৭৭ সালে বর্তমানে ভাঙনের কবলে থাকা মসজিদটি স্থাপন করা হয়।
শুধু এই সমজিদ নয়। মারাত্মক ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বালাগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ এবং বালাগঞ্জ-শেরপুর সড়ক, বালাগঞ্জ বাজার, জালালপুর বাজার, রাধাকোণা, ফাজিলপুর ও পৈলনপুর গ্রাম । ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। বিগত সময়ে অনেক মন্ত্রী এমপিও ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াস দিয়েছেন। কিন্তু কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন বলেন, নদী ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা না নিলে পুরাতন মসজিদের মত ঐতিহ্যবাহী এই জামে মসজিদও বিলিন হওয়ার পথে।
বালাগঞ্জবাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ জুনেদ মিয়া বলেন, স্থায়ীভাবে ভাঙ্গনরোধ করা না গেলে বালাগঞ্জ জামে মসজিদসহ বালাগঞ্জ বাজারের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলিন হয়ে যাবে।
বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর বলেন, শুধু মসজিদ নয়, বালাগঞ্জ উপজলার একাধিক সড়ক, বাজার ও কয়েকটি গ্রাম ভাঙনের মুখে রয়েছে। ভাঙন রোধ করতে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন প্রস্তাব রেখেছি। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ঘরবাড়ি, বিভিন্ন স্থাপনাসহ একাধিক সড়ক নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। এতে তিনটি ইউনিয়নের সাথে বালাগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। নদী ভাঙনের হাত থেকে বালাগঞ্জবাসীকে রক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আবদুল লতিফ বলেন, কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী বালাগঞ্জসহ সিলেটের অনেক অঞ্চল ভাঙনের কবলে রয়েছে। এই নদীর ভাঙন রোধে একটি মহা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। একটি টেকনিক্যাল কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ভাঙনের বিষয়টি সম্পর্কে উচ্চ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও অবগত আছেন এবং কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এটা সময় সাপেক্ষ বিষয়।