স্পেনের করোনা পরিস্থিতি- ০৯ এপ্রিল
বিশ্ব বাংলা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৫৬:৫৬,অপরাহ্ন ১০ এপ্রিল ২০২০আজকের কাতালোনিয়া:
- আজ কাতালোনিয়ার মৃতের সংখ্যা ১০০ নীচে এসেছে। গত তিন দিন ধরে ধারাবাহিতকা বজায় রেখে মৃতের সংখ্যা কমছে এবং আজকের সংখ্যাগত দুই সপ্তাহের মধ্যে সবচে কম। আজ ৯ এপ্রিল (২৪ ঘন্টায়) মৃত্যুবরণ করেছে ৮৩ জন। গতকাল মৃতের সংখ্যা রেজিস্ট্রি হয়েছিলো ১০৭ জন। গত পরশু সংখ্যাটি ছিলো ১৩৩ জনে। আজ কাতালোনিয়ায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ইতিবাচকহারে কমে এসেছে। আজকে নতুন রেজিস্ট্রি করা হয়েছে ৬৮৪ জন। গতকাল সংখ্যাটি ছিলো ১,৩৯৬ জন। আজকে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এই সংখ্যাটি কাতালোনিয়ার জন্য অবশ্যই অনেক স্বস্তিদায়ক।
- এ নিয়ে কাতালোনিয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩,২৩১ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩১,৭২৭জন। এছাড়া কাতালোনিয়ায় এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১৩,৫১৩জন।
আজকের স্পেন:
- আজকে ইতিবাচক খবর হচ্ছে, স্পেনে মৃতের সংখ্যা ও আক্রান্তের সংখ্যা নিম্নমূখী বাঁক দিচ্ছে। আজ ৯ এপ্রিল (গত ২৪ ঘন্টায়) মৃতের সংখ্যা রেজিস্ট্রি করা হয়েছে ৬৮৩জন। গতকাল ছিলো ৭৫৭জন। আজকে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা রেজিস্ট্রি করা হয়েছে ৫,৭৫৬ জন। গতকাল ছিলো ৬,১৮০ জন। আজকে সুস্থ হয়েছেন ৪,১৪৪জন। সব মিলে স্পেনে আজ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৪৪৬ জন, মৃত্যুবরণ করেছে ১৫,২৩৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫২,১৬৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ্য হয়েছেন শতকরা ৩৪ শতাংশ।
- স্পেনে করোনাভাইরাস মহামারির সংক্রমন সংখ্যা আশাব্যঞ্জকহারে কমছে। শুরু দিকে ৮ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা শতকরা ৪০ শতাংশ হারে বেড়েছিলো। সেই সংখ্যা এক মাস পরে আজ ৮ এপ্রিলে শতকরা ৩,৯ শতাংশে নেমে এসেছে। গত ২৬ মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত মৃতের হিসেব অনুযায়ী, আজকে মৃতের সংখ্যা তৃতীয় সর্বনিম্ন। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল সবচে কমন ৬৩৭জন মৃত্যুবরণ করেছিলো এবং দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ছিলো ২৬ মার্চ ৬৫৫জন।
- প্রেসিডেন্ট পেদরো সানচেস রাষ্ট্রীয় সতর্কতা ১২ মে পর্যন্ত বর্ধিত করতে চাইছেন। বর্তমানে দ্বিতীয়বার বর্ধিতকরণে রাষ্ট্রীয় শতর্কতা ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ আছে। এর মধ্যে এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট সংসদে বর্ধিতকরণ প্রস্তাব তুলবেন। তবে এর মধ্যেই ঘোষণা এসেছে সংসদে VOX ও CUP ‘না’ এর পক্ষে ভোট দেবে, ERC এড়িয়ে যাবে। আর প্রধান বিরোধী দল PP (Partido Popular) হ্যাঁ ভোট দেবে, তবে সরকারকে তিরষ্কার করার পর। বিরোধী দল PP-এর মতে, সরকার করোনা মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থ হয়েছে।
- স্পেনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে ফুসফুসে সংক্রমন, হৃদপিন্ডে ক্ষতিসাধনের সাথে নতুন কিছু উপশর্গও দেখা যায় শরীরের চামড়ায়। বিশেষ করে শিশু ও তরুনদের ক্ষেত্রে পিঠের চামড়ায় হামের মতো লালছে গাড় লাল দাগসহ হাতের-পায়ের আঙ্গুল লালচে হয়ে ফোলা ও গোটার মতো হয়ে চুলকানি হতে পারে। ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছে এমন উপসর্গ দেখলে ভয় না পেয়ে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে।
- মাদ্রিদে ১০০ বছরের এক বৃদ্ধা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ে জয়ী হয়েছেন। কঠিন মহামারিতে ভুগার পরেও তার মুখের হাসি আর রসবোধের কমতি হয়নি। তিনি ডাক্তারকে হেসে বললেন, পোকা আমাকে খেতে পারেনি। আমিও পোকাদের (করোনাভাইরাস) খেয়ে ফেলেছি।
- করোনা মহামারি মোকাবেলা করতে গিয়ে স্পেন তার দেশের জিডিপি (বাৎসরিক রাজস্ব) আয়ের শতকরা ১০ ভাগ খরচ করেছে ফেলেছে। মোট পরিমান প্রায় ১ লক্ষ ২৮ হাজার ২৮৮ মিলিয়ন ইউরো। এদিকে বার্সেলোনার মেয়র আদাকোলাও Betevé কে দেয়া ইন্টারভিউতে বলেছে, শুধু বার্সেলোনা মিউনিসিপল করোনা মহামারি মোকাবেলায় ২০০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে। শেষ পর্যন্ত এই মহামারির কারণে স্পেনের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমান কত তে গিয়ে দাঁড়ায় সেটা ভবিষ্যতই বলে দেবে।
মিরন নাজমুল, স্পেন।