স্পেনের করোনা পরিস্থিতি- ১১ এপ্রিল
বিশ্ব বাংলা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:৫৯:৪৪,অপরাহ্ন ১২ এপ্রিল ২০২০আজকের কাতালোনিয়া:
• আজ স্পেনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আশাব্যাঞ্জক হারে কমতির দিকে, তবে কাতালোনিয়ায় মৃতের সংখ্যা গতকালের তুলনায় একটু বেড়েছে।
আজ ১১ এপ্রিল (২৪ ঘন্টায়) কাতালোনিয়ায় মৃত্যুবরণ করেছে ১১১জন। গতকাল মৃতের সংখ্যা রেজিস্ট্রি হয়েছিলো ১০০ জন। গত পরশু সংখ্যাটি ছিলো ৮৩ জনে। আজকে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা রেজিস্ট্রি করা হয়েছে গতকালের তুলনায় কম। আজকে নতুন আক্রান্ত রেজিস্ট্রি করা হয় ১০৪৩ জন। গতকাল সংখ্যাটি ছিলো ১২৫৭ জন।
• এ নিয়ে কাতালোনিয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩,৪৪২ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪,০২৭জন। এছাড়া কাতালোনিয়ায় এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১৪,৯৭৫জন।
• জেনেরিলাদাদ দে কাতালোনিয়া সরকারকে পুরো অবরুদ্ধ অবস্থা তুলে নেবার দাবি জানাচ্ছে। কাতালোনিয়া সরকারের মুখপাত্র ও প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মেরিটেক্সেল বুদো রাষ্ট্রপতি পেদ্রো সানচেস বরাবর মানুষের অবরুদ্ধ সময়ের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি ও কাতালোনিয়ায় তুলনামূলক ইতিবাচক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এই আবেদন করে। মুখপাত্র সেই আবেদনে সামনের সপ্তাহ থেকে বদ্ধপরিস্থিতি শিথীল করে দেবার জন্য আবেদন করেন।
• আজকে কাতালোনিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয় বাসায় অবরুদ্ধ থাকা অবস্থা থেকে কিছুটা শিথীলতা আনার ক্ষেত্রে ৪টি বিষয় নির্ধারণ করেছেন।
কাতালোনিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলবা ভেরগেস আজ এক প্রেস কনফারেন্সে জানিয়েছেন, একটানা ৩ সপ্তাহ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরে পরিস্থিতির বিবেচনায় ৪ বিষয় সিথিল করার কথা ভাবছে কাতালান স্বাস্থ্যবিভাগ। তবে সেটা এখন নয়, বরং এপ্রিলের শেষের দিকে হবার সম্ভাবনা আছে।
সিথিলযোগ্য চারটি বিষয় হচ্ছে-
১. যারা সুস্থ আছেন তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দরকারি কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। তবে সেটা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
২. সুস্থ ব্যক্তিরা মৌলিক প্রয়োজনে রাস্তায় বের হবেন। তবে এটা সীমিত আকারে এবং এটা বাচ্চাদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।
৩. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবেন এমন ক্ষেত্রে স্বল্প পরিসরে বার, রেস্টুরেন্ট খোলার অনুমোদন দেয়া হবে।
৪.যথেষ্ট সতর্কতা বজায় রেখে এবং সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি নিয়ম মেনে স্কুলগুলো আবার চালু করা।
আজকের স্পেন:
• আজকেও স্পেনের আক্রান্ত ও মৃতের সূচক স্বস্তিদায়ক হারে নিম্নমূখী। গত ১৮ দিনে মধ্যে (২৩ মার্চের পর থেকে) আজকে মৃত্যুহার সবচেয়ে কম।
আজ ১১ এপ্রিল (গত ২৪ ঘন্টায়) মৃতের সংখ্যা রেজিস্ট্রি করা হয়েছে ৫১০জন। গতকাল ছিলো ৬০৫জন। আজকে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা রেজিস্ট্রি করা হয়েছে ৪,৮৩০জন। সংখ্যাটি গতকালের থেকে কম। গতকাল ছিলো ৪,৫৭৬ জন।
আজকে সুস্থ হয়েছেন গতকালের থেকেও বেশি ৩,৪৩৯জন। সব মিলে স্পেনে আজ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৮৫২ জন, মৃত্যুবরণ করেছে ১৬,৩৫৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫৯,১০৯ জন।
• করোনা মহামারিতে মৃতদের পরিবারের অনেকে তাদের স্বজনদের লাশ খুঁজছেন। আবার অনেকে জানেনও না তার স্বজন জীবিত আছেন না মারা গেছেন। আবার যারা মারা গেছেন, তাদের স্বজনদের অনেকে লাশ কোথায় আছে সে খবরও জানেন না। এমনই একজন রোসা তররেস। তার বাবা মাতিয়াস তররেস জিমেনেস ২৩ মার্চ মারা গেছে। তার মেয়ে গত ১৪ দিন ধরে বাবার লাশের সন্ধান করছেন কিন্তু বাবার লাশের সন্ধান এখনো পাননি।
অপর ব্যক্তি অস্কার হেরো, ১৯ দিন পরে তার বাবার মরদেহের সন্ধান পেয়েছেন। ব্যাপক মৃত্যুহারের জন্য কর্তৃপক্ষের তথ্য বিশৃঙ্খলার জন্যই এমনটি হচ্ছে। যেটা সত্যিই বেদনাদায়ক।
• স্পেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফেরনান্দো গ্রান্দে মারলাসকা আজ ঘোষণা করেছেন, সোমবার থেকে ১০ মিলিয়ন (এক কোটি) মাস্ক বিতরণ করা হবে। তিনি বলেন, সোমবার থেকে অপরিহার্য পরিসেবা ও কাজের জন্যে যারা বাড়ি থেকে বের হবেন তাদেরকে জনসমাগত বেশি এমন স্থানে এবং পাবলিক পরিবহনে এই মুখোশ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
প্রোটেকশন সিভিল ও এজেন্টের ৩লক্ষ ৫০ হাজার ব্যক্তি সোম, মঙ্গল ও বুধবার এই মাস্ক পাবলিক প্লেসে, মেট্রো রেল স্টেশনে বিতরণ করবেন।
• মাদ্রিদে Hospital campaña de IFEMA র প্রবেশ পথের বড় পরিসরে সিকিউরিটি ক্যামেরা ডিটেক্টরের সাথে থার্মোমিটার সেট করা হয়েছে। যারাই এখানে প্রবেশ করে সাথে সাথে মনিটরে তাদের শরীরের তাপমাত্রার রেকর্ড হয়ে যায়। সম্ভাব্য করোনা সংক্রমনে কেউ আছেন কিনা সেটার উপসর্গ দেখার জন্যে এই ব্যবস্থা। এই বিশেষ থার্মোমিটার ৩ মিনিটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৫ হাজার মানুষের শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করতে পারে।
মিরন নাজমুল, স্পেন ।