স্পেনের করোনা পরিস্হিতি-২৮ এপ্রিল

বিশ্ব বাংলা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৫১:৪৩,অপরাহ্ন ২৯ এপ্রিল ২০২০আজকের স্পেন:
᛫ আজ ২৮ এপ্রিল (২৪ ঘন্টা) স্পেনে মৃতের সংখ্যা রেজিস্ট্রি করা হয়েছে ৩০১ জনে। গতকাল মৃতের সংখ্যা ছিলো ৩৩১জন। গতপরশু ছিলো ২৮৮জন।
আজকে আক্রান্তের সংখ্যা গতকালের থেকে ৯ শতাংশ কম। আজ নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১,৬৭৩জন। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলো ১৮৩১জন। গত পরশু সংখ্যাটি ছিলো ১৭২৯জন।
আজকে সুস্থ হয়েছে গতকাল থেকে ৩৯ শতাংশ কম। আজকে সুস্থ হয়েছে ১,৩০৮জন। গতকাল হয়েছিলো ২১৪৪জন। গতপরশু সুস্থ হয়েছিলো ৩০২৪জন।
এ নিয়ে স্পেনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ৩২হাজার ১২৮জন। মোট মৃত্যুবরণ করেছে ২৩ হাজার ৮২২জন। সুস্থ হওয়ার সংখ্যা গতকাল ১ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে মোট সুস্থ হয়েছে ১ লক্ষ ২ হাজার ৫৪৮জন।
᛫ কখনো দ্রুতগতি বা কখনো মন্থর হলেও করোনা মহামারিতে মৃতের সংখ্যা স্পেনে ক্রমান্ময়ে কমে আসছে।
মৃতের হার কমে আসার পর্যায়টাকে ২ ধাপে ভাগ করলে,
প্রথম ধাপ ছিলো, ১৯ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত। এ সময় মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৪৪০জন থেকে সর্বনিম্ন ৩৯৯জন পর্যন্ত উঠানামা করেছে।
আর দ্বিতীয় ধাপ, ২৪ এপ্রিল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত। এ সময় মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩৭৮ থেকে সর্বনিম্ন ২৮৮ জনে ওঠানামা করছে।
᛫ স্পেনের করোনা পরিস্থিতি বর্তমানে যে অবস্থার ভেতরে যাচ্ছে সেই বিচারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হবে ৪ মে থেকে এবং ‘নতুন স্বাভাবিক অবস্থা’ ফিরে আসতে পারে জুন মাসের শেষে। তবে ‘নতুন স্বাভাবিক’ অবস্থায় পরিস্থিতি বিচারে জীবনযাত্রার অনেক কিছুতে আইনগত পরিবর্তন আনা হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী পেদরো সানচেস তার বক্তব্যে আজ সেটাই বলেছেন। তিনি জানান, ৪ মে থেকে স্পেনের কিছু দ্বীপ অঞ্চলগুলোতে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় আনা হবে, তারপর ১১ মে থেকে আনা হবে কিছু প্রদেশে, এরপর ক্রমান্তয়ে জুনের শেষের দিকে নতুন ‘নতুন স্বাভাবিক অবস্থা’ ঘোষণা করা হতে পারে।
‘নতুন স্বাভাবিক অবস্থা’র কথা ব্যখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন- ‘আমরা করোনা মহামারীর আগে যেভাবে জীবনযাত্রা পরিচালনা করতাম সেভাবে করতে পারবো না পরের সময়ে।
যেমন- আমাদের বের হবার সময় মাস্ক নিতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। যদি সমুদ্রস্নানে যাই, তাহলেও নতুন একই নিয়মে যেতে হবে। আগে যেমন বন্ধুদের সাথে বের হতাম আমরা, এখন বের হতে হবে একা বা যাদের সাথে ঘরে বসবাস করি তাদের সাথে।’
᛫ যে ধাপগুলোর মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টি হবে সেগুলো হলো-
>ধাপ 0: মুক্ত বাতাসে শারীরিক পরিচর্যা, ব্যয়াম ইত্যাদির অনুমতি দেয়া হবে, তবে আলাদা আলাদাভাবে। এছাড়া অর্থবিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে ব্যক্তিগত অ্যাপয়ন্টমেন্ট (Cita Previa)-এর মাধ্যমে অ্যাটেন্ড করা হবে।
>ধাপ ১: বড় বড় শপিং সেন্টার ও কমার্শিয়াল পার্ক বাদে এ ধরণের তুলনামূলক ছোট প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত নিয়মের মাধ্যমে খুলে দেয়া হবে। শতকরা ৩০% ব্যবহারের (ধারণ ক্ষমতা) অনুমোদন দিয়ে হোটেল বা পর্যকদের থাকার স্থানগুলো খোলা হবে। উপসনার স্থানগুলোও সীমাবদ্ধ নিয়মের মধ্যে খোলা হতে পারে।
> ধাপ ২: বার, রেস্টুরেন্ট ও এ জাতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তেররাসা বাদ দিয়ে শুধু ভেতরের জায়গার শুধু তিনভাগের একভাগ জায়গায় টেবিলে সার্ভিস করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বাকী জায়গায় পর্দায় ঢেকে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
> ধাপ ৩: এটা হবে শেষ ধাপ যতক্ষণ না পর্যন্ত নতুন স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসে। এই ধাপে চলাফেরা স্বাভাবিক করা হবে। আবাসস্থলের বাইরে ও পরিবহনে মাস্ক ব্যবহারের জন্য পরমর্শ থাকবে। ব্যবসায়ী সুযোগ ৫০% উন্নীত করা হবে এবং সেটা ২মিটার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে করা হবে।
আজকের কাতালোনিয়া:
᛫ আজ কাতালোনিয়া মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার অতিক্রম করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় মৃতের সংখ্যা রেকর্ড করা হয় ৬৬ জন (হাসপাতাল সূত্রে)। নতুন আক্রান্ত হয়েছে আজ ১,৫১০জন। গত ১২ দিনের মধ্যে আজকে আক্রান্তের সংখ্যা সবচে বেশি।
এ নিয়ে কাতালোনিয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৭৩জন। মোট আক্রান্ত হয়েছে ৫১হাজার ৬৭২জন।
᛫ বার্সেলোনার পৌর মেয়র আদা কোলাও LaSexta কে দেয়া এক ইন্টারভিউতে বলেছেন, সামনের ইউকেন্ডে বার্সেলোনার কিছু কিছু পার্ক খুলে দেবার চিন্তা করছে পৌরসভা। তিনি জানান, বিশেষ করে যে সব পার্ক সংশ্লিষ্ট রাস্তা হাটার জন্যে যথেষ্ট চওড়া এবং হাটার সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা যায় সেগুলো খোলার চিন্তাভাবনা করছে পৌর প্রশাসন।
এ ক্ষেত্রে বার্সেলোনার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নান্দনিক সবুজ মনজুয়িক পার্কও খুলে দেয়া হতে পারে।
᛫ গড়ে তিন ভাগের একভাগেরও বেশি কাতালান অর্থনৈতিকভাবে খারাপ অবস্থার মধ্যে বাস করছেন। কাতালোনিয়ার গণমাধ্যম TV3 ও Catalunya Ràdio করা এক সমীক্ষায় এমনই ফল পাওয়া গেছে।
৪০ দিনেরও বেশি সময় ধরে হোম কোয়ারেন্টাইনে কাটানোর পর প্রতিনিয়ত এক তৃতীয়াংশেরও বেশি এই কাতালোনিয়ার অধিবাসী চোখেমুখে আরো অন্ধকার দেখছেন। শতকরা হারে তাদের সংখ্যা ৩৭%।
করোনা মহামারি বিপর্যয়ের পর থেকে কাতালোনিয়ার মোট অধিবাসীদের মধ্যে বর্তমানে খুব ভালো আছে ৩,৩%, ভালো আছে ২৪,৩%, খারাপের দিকে যাচ্ছেন ৩৬,৮%, খারাপ আছে ১৮,৩%, খুব খারাপ আছে ১৭,৫% মানুষ।
মিরন নাজমুল।
