করোনার প্রভাব ঈদের আনন্দে: কাতালোনিয়ায় জামায়াত হবে না!
মিরন নাজমুল
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৪৯:০৪,অপরাহ্ন ৩০ জুলাই ২০২০কভিড১৯ এর কারণে জেনেরালিদাদ দে কাতালোনিয়া এবারের কুরবানীর ঈদে নামাজের জন্যে অনুমতি না পরামর্শ দিয়েছে বার্সেলোনা পৌর প্রশাসনকে। সে জন্য ৩১ জুলাইয়ের ঈদুল আযহার ঈদের জামায়াত নিয়ে কাতালোনিয়ায় অনিশ্চিতা দেখা দিয়েছে। এই মর্মে স্থানীয় স্প্যানিশ পত্রিকা এল পেরিওদিকো সংবাদ প্রকাশ করেছে।
এ ছাড়া করোনাভারাসের পুনঃসংক্রমনের কারণে পূর্বনির্ধারিত নিয়ম অনুসারে ঈদ সংক্রান্ত কোন আনুষ্ঠানিকতায় ১০ জনের বেশি জড়ো হতে পারবে না বলে সতর্ক করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এ ছাড়া কেউ ব্যক্তিগতভাবে কুরবানি দিতে পারবেন না এবং অনুমোদিত মাংসের দোকানে আগে থেকে সিডিউল নিয়ে কুরবানির মাংস সংগ্রহ করতে হবে।
স্পেনের অঙ্গরাজ্য কাতালোনিয়া প্রথম কুরবানীর ঈদকে নিয়মিত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান হিসেবে উন্মুক্ত করে। কাতালোনিয়া বসবাসকারী প্রায় ৫ লক্ষ মুসলমান সুন্দর ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে কুরবানীর ঈদ পালন করে।
কাতালোনিয়ার যুবকশ্রেনীর মধ্যে সর্বাধিক বিশ্বাসী ধর্মের তালিকায় ‘ইসলাম’ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। কাতালান প্রশাসন সে জন্য ইসলামিক আচার অনুষ্ঠানকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং প্রশাসনিক সহযোগিতা নিশ্চিত করছে।
রোজার ঈদের ৭০ দিন পর পালিত হয় এই কুরবানির ঈদ। যারা কুরবানি দেন তারা নিজেরা সরাসরি পশু কুরবানীতে অংশ নিতে চাইলেও এখানে নিয়ম ভিন্ন।
এখানে নিয়ম বহির্ভুতভাবে কুরবানি দেয়া যায় না। অনেকে গোপনে মেষশাবক কেনার জন্য পাহাড়ে বা নদীর পাড়ের খামারে যায় এবং নিজেরা অনুমোদন ও স্বাস্থবিধি বহির্ভুতভাবে পশুকে কুরবানি দেয়।
কাতালোনিয়ার মুসলিম কমিউনিটির কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ ঘাইদোনি বলেন, এখানের কশাইখানাগুলোকে আমরা আমাদের ধর্মীয় প্রথা অনুসারে কোরবানি দেয়ার নিয়মকানুনে বাধ্য করতে পারি না।
এ জন্য অনেকে এভাবে গোপনে কুরবানি করতে যায়। তিন বছর পূর্বেও এভাবে নিয়ম না মেনে কশাইখানার বাইরের পরিবেশে কুরবানি করার জন্যে ৬জনের একটি দল ও কশাইখানাকে জরিমানা হিসেবে ২২ হাজার ২০৬ ইউরোর জরিমানা গুনতে হয়েছে।
কাতালোনিয়ার প্রাণি সম্পদ ফেডারেশনের (ভেড়া ও ছাগল) হিসেব অনুযায়ী আগস্ট মাসে প্রায় ৯০% মেষশাবক অবৈধ পথে বিক্রি হয়। ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিসকো বাতায়া বলেন, এ সব মেষশাবক স্বাস্থগত পরীক্ষা, কোন নির্দেশিকা ও রশিদ (Factura) ছাড়া বিক্রি হয়।
জবাই করার পরে মাংস সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজিং ব্যবস্থায় রাখা বাধ্যগত হওয়ার পরও, সেভাবে রাখা হয় না।
এ জন্য তিনি দাবি করেন, এভাবে চলতে থাকলে প্রশাসনিক ক্ষোভের সৃষ্টি হবার আগেই এই কুরবানির কাজে আইনগত বৈধ উপায়ে ও স্বাস্থবিধি অনুসারে নিয়মতান্ত্রিকতায় সবার চলে আসা উচিত।
ফ্রান্সিসকো আরো জানান, এই বছরের কুরবানির এই পশুর দাম দ্বিগুন থেকে ৩ গুন পর্যন্ত বেড়ে গেছে বলে জানা গেছে। এবারের কুরবানির ঈদে প্রায় ১ লক্ষ পশুর চাহিদা যোগান দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কৃষি ও প্রাণিসম্পদের পরিচালক অ্যালিসেন্ডা গিয়াউমেস জানান, কাতালোনিয়ায় অবস্থিত মোট ৭২টি কসাইখানার প্রায় সবগুলোই কুরবানীর প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রস্তুত থাকে। এবারও তেমনই রয়েছে।
এখানে কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা হালাল উপায়ে পশু জবাই করে।
তিনি বলেন, এখানে সমস্যা হলো প্রাণীটিকে হত্যা করার আগে তাকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে স্তম্ভিত করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি ইউরোপীয় প্রচলিত নির্দেশনাগুলোর মধ্যে সেরা বিকল্প হিসেবে পালন করা হয় সারা ইউরোপে। তবে তিনি এটাও বলেন, হয়তো বিশুদ্ধ ইসলাম এটাকে স্বীকৃতি দেবে না।