বার্সেলোনা শহীদ স্মৃতি ফলক
বিশ্ব বাংলা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১৮:২৭,অপরাহ্ন ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪বার্সেলোনায় বাংলাদেশী কমিউনিটি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে সংস্কৃতিপ্রিয় প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রানের দাবী হয়ে উঠে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মানের। দাবী উত্থাপনের পাশাপাশি কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ থেমে থাকেন নি, প্রায় দুইযুগ থেকেই অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্থবক অর্পন করে যাচ্ছেন। প্রথমদিকে হলের মধ্যে অনুষ্ঠানমালা সীমাবদ্ধ থকলেও ২০০১ সালে সমস্থ বাংলাদেশীদের সাথে নিয়ে প্লাসা কাতালোনিয়ার পাদদেশে অস্থায়ী শহীদ মিনার বানিয়ে ২১ উদযাপন করে “বাংলাদেশ কোলতোরাল এসোসিয়েশন”।
এখনও আমাদের হয়তো স্থায়ী শহীদ মিনার নেই কিন্তু প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি স্থায়ী শহীদ স্মৃতি ফলক। সাংগঠনিক অথবা ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই স্থায়ী শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠায় কাজ করলেও মূল কৃতিত্ব কিন্তু বার্সেলোনা প্রবাসী বাংলাদেশীদের।
প্রথম দিকে “বাংলাদেশ কোলতোরাল এসোসিয়েশন” এবং “এসোসিয়েশন কোলতুরাল ই উমানেতারিয়া দে বাংলাদেশ” এ দু’টি সংগঠন দেশীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা পালন করলেও শহীদ মিনার নির্মান প্রসংগে “এসোসিয়েশন কোলতুরাল ই উমানেতারিয়া দে বাংলাদেশ” অগ্রনী ভুমিকা পালন করে। দীর্ঘদিন থেকে সংগঠনটি যথাযত মর্যাদায় দিবসটি পালনের পাশাপাশি সংগঠনের প্রবীন নেতৃবৃন্দরা স্থানীয় পৌরসভার কাছে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মানের জন্য আবেদন করে আসেন কিন্তু কিছু দিন পরপর পৌরসভার দায়িত্ব পরিবর্তন হওয়াতে আমাদের আবেদনটি পিছনে পড়ে থাকে।
আমার হাতে যতেষ্ট সময় এবং দেশীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে প্রবল আগ্রহ থাকায় ২০১২/২০১৩ সালে তৎকালীন এসোসিয়েশন কোলতুরাল ই উমানেতারিয়া দে বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দরা ২১ উদযাপন এবং ২১ সংক্রান্ত সমস্থ দায়িত্ব আমাকে প্রদান করেন। আমিও আমার সমস্ত মেধা দিয়ে বিভিন্ন দপ্তর এবং স্থানীয় পৌরসভার সংশ্লিষ্টদের আস্তে আস্তে বোঝাতে সক্ষম হই। অবশ্যই আমাকে সার্বোক্ষনিক সহযোগিতা করেন আমার এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে শফিক খান, আলাউদ্দিন হক নেসা, আউয়াল ইসলাম, মাহারুল ইসলাম মিন্টু, উত্তম কুমার, সহজ মোল্লা এবং বিশেষ সহযোগীতা করেন সাংবাদিকদের সংগঠন “স্পেন বাংলা প্রেসক্লাব” এর নেতৃবৃন্দ।
অবশেষে ২০১৯ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী স্থানীয় পৌরসভা আমাদের শহীদ মিনারের পরিবর্তে স্থায়ী “শহীদ স্মৃতি ফলক” উপহার দেন বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা রাভালের প্লাসা পেদরো-তে। অবশ্য, শহিদ মিনারের জন্য এখনো কাজ চালিয়ে যাচ্ছি এবং কর্তিপক্ষ আস্বস্থ করেছেন সময় এবং সুযোগে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মান করে দেবেন। এখন আমরা অনেকেই এই প্লাসা পেদরোকে “একুশে চত্ত্বর ” হিসেবেই জানি।
ঐ একই দিনই পৌরসভার নেতৃবৃন্দ শহীদ স্মৃতি ফলক উদ্ভোধন এবং ২১শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের সুযোগ করে দেন। সকলের অংশগ্রহনে সম্মিলিত বাংলাদেশীরা উদযাপন করে এক অনারম্বরপূর্ণ ২১। আর সংস্কৃতিপ্রিয় বাংলাদেশীরা আমাকেই ২১ উদযাপন পরিষদের আহবায়ক করেন এবং এ অনুষ্ঠানটি সর্বজনীন করেন তোলেন।
লেখক- মোহামেদ কামরুল।
বার্সেলোনা, স্পেন।